পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য | The Mystery of The Creation of The Earth in Bangla



আমাদের পৃথিবী (Earth), এটা সেই সব প্রাণীদের ঘর যাদেরকে আমরা জানি এবং যাদের আশেপাশে আমরা বসবাস করি। বিজ্ঞানিদের ধারণামতে আমাদের পৃথিবীর বয়স এই মহাবিশ্ব (Universe)-এর তিন ভাগের এক ভাগ, আর তারা এটাও বলেথাকেন যে, আমাদের পৃথিবী’ই ইউনিভার্সের সবথেকে সুন্দর জায়গা।



আমাদের পৃথিবীতে সবুজ গাছপালা, নদী, বায়ুমণ্ডল এবং বিশাল বিশাল পর্বতের মজুদ আছে। এই গ্রহ বা আমাদের পৃথিবী একটি তারার পরীক্রমা করছে, যেটা আমাদেরকে তার আলোর মাধ্যমে শক্তি প্রদান করে থাকে, কিন্তু এই গ্রহ বা আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীর সৃষ্টি বা উৎপত্তি কি করে হলো? আর এটা কি দিয়ে তৈরি হলো তা নিয়ে রয়েছে অনেক রহস্য ও ইতিহাস আর তাই এই বিশেষ গ্রহ বা পৃথিবীর সৃষ্টি নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।

প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবীর সৃষ্টি, সৌরমন্ডলের বড়বড় পিন্ড বা সহজ ভাষায় পাথর’ও বলাযায় যেগুলো গুরুত্বাকর্ষণ শক্তির কারণে একে অপরের সাঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল এবং এই সমস্ত পিন্ড গুলো একত্র হয়ে একটি বিশাল পিন্ডের তৈরি করেছিল, যেটাকে আজ আমরা আমাদের পৃথিবী হিসেবে চিনি। এই প্রক্রিয়া পূরণ হতে প্রায় ১০ থেকে ২০ মিলিয়ন বছর সময় লেগেছিলো। এই সময় সেই পিন্ড বা আমাদের আজকের এই পৃথিবী নামক গ্রহটি ভীষণ গরম ছিল আর সেই সময়’ই মঙ্গল গ্রহের মত বড় একটি বস্তু এসে আমাদের পৃথিবীতে আঘাত করে, এর ফলে পৃথিবীর কিছু অংশ পৃথিবী থেকে ভেঙে পৃথিবীর কক্ষপথ (Orbit)-এ চলে যায় আর এইগুলো পৃথিবীর পরিক্রমণ করতে লাগে। এই সমস্ত টুকরো একসাথে মিলে আমাদের পৃথিবী থেকে দেখতে পাওয়া সুন্দর চাঁদটির তৈরি করে, এই সমস্ত কথাগুলো বলতে গেলে খুব ছোট’ই মনেহয় কিন্তু আসলে এই প্রক্রিয়া গুলো হওয়ার জন্যেও প্রায় মিলিয়ন বছর সময় লেগেছিল। পৃথিবীর সাথে এতবড় বড় দুটি জিনিস হওয়ার পারও এই সময় পৃথিবী ভীষণ গরম ছিল, আর পৃথিবীতে লাগাতার বিভিন্ন ধরনের গ্রহাণূ (Asteroid) আঘাত করতো।

আমাদের পৃথিবীতে তখন লাভার সমুদ্র আর বিষাক্ত আবহাওয়া ছিল, কিন্তু ধীর ধীর এইসবের এখন পরিবর্তনের সময় এসে গিয়েছিলো, পৃথিবীর তাপমাত্রা ঠান্ডা হতে শুরু করে, পৃথিবীর ভেতরে জমে থাকা জল পৃথিবীর উপরের ভূমিতে আসতে লাগে, আর এতদিন পৃথিবীতে যে গ্রহাণু (Asteroid) ঘনঘন আঘাট করতো তারাই পৃথিবীর সুন্দর দিন বয়ে আনলো কারণ যেই সমস্ত জল পৃথিবীতে এসেছিল সেগুলো ওই গ্রহাণু গুলোর সাথেই পৃথিবীতে এসেছিল।

পৃথিবীর গরম তাপমাত্রার কারণে জল বাষ্প হতে থাকে, আর পৃথিবীর আকাশে মেঘের সৃষ্টি হয়। এই সমস্ত মেঘ বৃষ্টি রূপে পৃথিবীতে ঝড়তে থাকে আর পৃথিবীর তাপমাত্রা দ্রুত কমতে থাকে।

এমতাবস্থায় পৃথিবীতে যখন বৃষ্টি হচ্ছিল তখন তাপমাত্রা দ্রুত কমতে থাকে আর পৃথিবীর ভূমিতে সমুদ্রের সৃষ্টি হতে থাকে আর এরই সাথে পৃথিবীতে মজুদ টেকটোনিক প্লেট (Tectonic Plate)-এর মধ্যে গতিবিধি (Movement)-এর পরিবর্তন শুরু হয়, আর এই সমস্ত প্লেটের একে অপরের সাথে সংঘর্ষের কারণে সৃষ্টি হয় বড় বড় ‘পাহাড়ের’ আর এগুলোর একে অপর থেকে দূরে যাওয়ার কারণে সৃষ্টি হয় গভীর গর্তের। আমাদের পৃথিবীর সব থেকে বড় পাহাড় ‘মাউন্ট এভারেস্ট’ আর সব থেকে বড় গভীর গর্ত ‘মারিয়ানা ট্রেঞ্চ’ যেগুলোর সৃষ্টি এই টেকটোনিক প্লেটের মুভমেন্টের কারণেই হয়েছিল।


পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ২ লক্ষ বছর ধরে বসবাস করছে, যা পৃথিবীর বয়সের তুলনায় মাত্র ০.০০৪ শতাংশ আর এটা পৃথিবীর বয়সের তুলনায় খুবই কম। এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানের ধারণামতে এই সম্পূর্ণ সৌরমণ্ডলে পৃথিবী’ই একমাত্র গ্রহ যেখানে ‘জীবন’ আছে, আর আমরা খুবই ভাগ্যবান যে এই গ্রহতে আমরা খুব সুখে ও শান্তিতে বসবাস করতে পারছি।

আমাদের আজকের পোষ্টটি আপনার কেমন লাগলো তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন, আর পোষ্টটি যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না, ধন্যবাদ।

No comments:

Powered by Blogger.