ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তি ও পালন করার কারণ | History of Valentine's Day in Bangla
ভালোবাসা শব্দটি খুব সহজেই সকলের সহজাত প্রবৃত্তির সাথে মিশে যায়, কেননা জন্মের পর থেকেই মানুষের বেড়ে ওঠা এই ভালোবাসাকে কেন্দ্র করেই আর তাই ভালোবাসা দিবস (Valentine's Day) পালনের দিনটিকে নিয়ে সকলের ভাবনাটাও থাকে বিশেষ।
ভালোবাসা দিবস দিনটির শুরুর গল্পটাও বেশ রঙিন আর তাই আমাদের আজকের আয়োজনে থাকছে ভ্যালেনটাইন্স ডে (Valentine's Day) বা বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তি ও এটি পালন করার কারণ সম্পর্কে।
“ভালোবাসা” সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ আর আকাঙ্খিত একটি আবেদন, কিন্তু ঠিক কবে থেকে এই ভালোবাসা বা আকাঙ্খার উৎপত্তি তা জানা কখনোই সম্ভব নয়। ভালবাসা বা আকাঙ্খা প্রাণীজগতের অন্যান্য সকল প্রাণের মাঝে পরিলক্ষিত হলেও মানুষ যেভাবে একে জীবন ও প্রেরণার অনুষঙ্গ করেছে তা আর কেউ পারেনি।
ভালোবাসা নামের এই অজানা অদেখা আর চাপা কষ্টের সেই অব্যাক্ত অনুভুতিকে মহিমান্বিত করতেই প্রতি বছরের একটি বিশেষ দিনকে ঘোষণা করা হয়েছে “ভ্যালেনটাইন্স ডে ” বা ভালবাসা দিবস।
পাশ্চাত্যের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এই দিনটি ১৪ই ফেব্রুয়ারী বা ঠিক ফাল্গুনের ২য় দিন হিসেবে ধার্য করা হয়।
ভালবাসা দিবস নিয়ে অনেকের কাছে রয়েছে অনেক ইতিহাস আর সাথে রয়েছে অনেক রহস্য। এই দিবস নিয়ে একটু খোঁজ নিলেই দেখা যাবে, এরও রয়েছে পুরোনো অনেক ইতিহাস। কেন এই ভ্যালেনটাইন্স ডে? আর কবে থেকে এই দিবসের শুরু? আর কে’ই বা ছিলেন ভ্যালেনটাইন?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পেতে হলে আমাদের হাঁটতে হবে কয়েক শতাব্দী পূর্বের ইতিহাসের পাতায়। ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্রকরে অনেক গল্পই প্রচলিত আছে আর তেমন’ই একটি প্রচলিত গল্পের সঙ্গে পরিচিত হবো আমরা।
বিশেষ অনেক ইতিহাস মতে সেন্ট বা সন্তো ভ্যালেনটাইন (Saint Valentine) নামে ছিলেন এক ধর্মযাজক। ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন শিশুপ্রেমিক, সামাজিক ও সদালাপি, খ্রিস্টধর্ম প্রচারক এবং সেই সাথে তিনি ছিলেন একজন ভাল চিকিৎসক। সে সময় রোমানদের সম্রাট ছিলেন ক্লাডিয়াস। রোম সম্রাট ক্লডিয়াস ছিলেন বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজায় বিশ্বাসী আর তাই রোম সম্রাটের পক্ষ থেকে সকলকে দেব-দেবীর পূজা করতে আদেশ করা হয় কিন্তু এই আদেশ তখন ভ্যালেন্টাইন না মানায় তাকে কারারুদ্ধ করা হয় এবং তার খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগের আদেশ দেওয়া হয়, কিন্তু সম্রাটের বারবার খ্রিস্টধর্ম ত্যাগের আজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করে ভ্যালেনটাইন।
সেন্ট ভ্যালেনটাইন কারারুদ্ধ হওয়ার পর যুবক-যুবতীদের অনেকেই প্রতিদিন তাকে কারাগারে দেখতে আসত এবং ফুল উপহার দিত আর সেইসাথে তারা বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক কথা বলে ভ্যালেনটাইনকে উদ্দীপ্ত রাখত। এদের সাথে এক কারারক্ষীর এক অন্ধ মেয়েও ভ্যালেনটাইনকে দেখতে যেত আর তারা দু'জন প্রাণ খুলে কথা বলত। একসময় ভ্যালেনটাইন সেই মেয়ের প্রেমে পড়ে যায় এবং কিছুদিন পর সেন্ট ভ্যালেনটাইনের আধ্যাত্মিক চিকিৎসায় অন্ধ মেয়েটি তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়।
ভ্যালেন্টাইনের ভালোবাসা ও তার প্রতি দেশের যুবক-যুবতীদের ভালোবাসার কথা সম্রাটের কানে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়েযান এবং ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভ্যালেনটাইনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। সেই থেকেই দিনটির শুরু।
আমাদের দেশে দিনটির শুরু...
১৯৯৩ সালের দিকে আমাদের দেশে ভালোবাসা দিবসের আবির্ভাব ঘটে, আর তখন থেকেই ভালোবাসা দিবসের এই চিন্তাটি নতুন প্রজন্মকে বেশি আকর্ষণ করে। সে থেকে’ই আমাদের দেশে দিনটির শুরু।
ভ্যালেনটাইন বা ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস নিয়ে অনেক প্রচলিত ঘটনা ও তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায়, কিন্তু এতে একেকজনের ধারণা ও ইতিহাস একেক রকম তবে ভালোবাসা পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর ও কোমল অনুভূতি, আর তাই ১৪ই ফেব্রুয়ারি মানেই প্রজন্মের কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত দিন তাই এই দিনটিকে পৃথিবীর অনেক দেশে অত্যন্ত আগ্রহ ও আনন্দের সঙ্গে পালন করা হয়ে থাকে।
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেনটাইন্স ডে নিয়ে আপনার কোন মতামত থাকলে তা আমাদের জানাতে ভুলবেন না আর আমাদের লেখাটি ভাল লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন, ধন্যবাদ।
No comments: