এলিয়েন কি? কাদেরকে এলিয়েন বলা হয়

alien and UFO

মহাবিশ্ব (Universe)-এর তুলনায় আমাদের সৌরজগৎ (Solar System) কিছুই নয়, এক কথায় বলতে গেলে একেবারে বালির মত মানে অনেক অনেক বালির মাঝে আমাদের সৌরজগৎ শুধুমাত্র একটি বালির কণা আর সে তুলনায় পৃথিবী (Earth) তো অনেক ছোটো। আমাদের এই মহাকাশ (Space)-এর অনেক কিছুই এখনও আবিষ্কৃত হয়নি, অধরা রয়ে গেছে মহাবিশ্বের অনেক রহস্য। আমাদের জানার সীমাবদ্ধতায় হয়তো অচেনা রয়ে গেছে নানা বিস্ময়কর জগৎ। কতটা জানি আমরা আর আমাদের মহাবিশ্বের কত কোটি কোটি সৌরজগৎ রয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা তো কেবল চাঁদে পা দিলাম এবং মঙ্গল গ্রহে বিভিন্ন অভিযান শুরু করেছি কিন্তু এর বাইরের প্রায় সবই আমাদের অজানা।


আমাদের এই অজানা মহাবিশ্বে প্রানের অস্তিত্ব থাকা অস্বাভাবিক কিছুনয়, অস্বাভাবিক নয় পৃথিবী ছাড়া বসবাসযোগ্য কোন গ্রহের অস্তিত্ব-ও আর সেই অচিন গ্রহের বাসিন্দাদেরকেই আমরা ভিনগ্রহের প্রাণী (Alien) বলি। 

ভিনগ্রহের প্রাণী (Alien) বলতে বোঝায় যাদের সৃষ্টি পৃথিবীর বাইরে মহাবিশ্বের অন্য কোথাও, আর সেখানেই এদের বসবাস। 

ভিনগ্রহের প্রাণী (Alien) দেখতে কেমন হবে তার কোন সঠিক উত্তর নেই। তারা দেখতে পৃথিবীর প্রাণীদের কাছাকাছি-ও হতে পারে আবার এই ধারণা থেকে সম্পূর্ণ আলাদাও হতে পারে আবার সত্যি সত্যিই যে মহাবিশ্বে এলিয়েনের কোন অস্তিত্ব আছে কিনা এ নিয়েও দিধাদন্দের অন্ত নেই। 

এলিয়েনদের দেখতে কেমন, আমাদের থেকে পিছিয়ে নাকি অনেক এগিয়ে, তাদের ভাষা ও অন্যান্য কর্মকান্ড এইসব বিষয় সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি তবে এদের অস্তিত্ব রয়েছে এই ধারণার পেছনে যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। 

সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে অধিকাংশ মানুষই এলিয়েনের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে। তাদের ধারণা এলিয়েন আমাদের মাঝেই হেঁটে বেড়াচ্ছে। ভিনগ্রহের প্রাণী বা এলিয়েন আছে এবং তারা আমাদের মধ্যেই মানুষের ছদ্মবেশে হাঁটছে চলছে ও ঘুরে বেড়াচ্ছে তবে বাস্তবে তার প্রমান মিলুক বা নাই মিলুক তাও অন্ততপক্ষে প্রতি পাঁচজনে একজন মানুষ এমনটাই বিশ্বাস করেন যে এলিয়েনের অস্তিত্ব আছে।


alien-face


এলিয়েনের অস্তিত্ব আছে কি নেই বা থাকলে তারা কোথায় কিভাবে রয়েছে এই নিয়ে বি.সি.এম.এম এর এক বিশ্ব জরিপের ফলাফল মানুষের সামনে এসেছিল। সেখানে ২২টি দেশে প্রায় ২৩ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর এই জরিপ চালানো হয় যেই জরিপে এটা দেখা গেছে যে ভারত এবং চীনে এর মাসুষের ক্ষেত্রে এলিয়েনের বিশ্বাস সব থেকে বেশি। সেই জরিপের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করে এলিয়েনরা মানুষের ছদ্মবেশে আমাদের মাঝে ঘুরে বেড়াচ্ছে অবশ্য বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষই এলিয়েনের অস্তিত্ব বিশ্বাস করে না। এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয় যে, এলিয়ে বিশ্বাসে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যে এই সংখ্যা বেশি কারণ জরিপ অনুযায়ী ছেলেদের বিশ্বাস ২২% শতাংশ হলে মেয়েদের মধ্যে এটি ১৭% এবং ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে ৩৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে এলিয়েনের বিশ্বাস বেশি। 



এলিয়েন থাকা না থাকার দন্দ- 
এই পৃথিবী ব্যাতিত অন্য কোন গ্রহে প্রাণী আছে কিনা সেটা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক এখনো চলছে। মহাবিশ্বের কোথাও কেউ আছে কিনা, ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য চলছে বিরামহীন চেষ্টা আর উন্নত দেশগুলো এর রিসার্চ প্রজেক্ট এর পেছনে ব্যয় করছে কোটি কোটি ডলার। 

আমেরিকান জ্যোতিষ বিজ্ঞানী ১৯৬০ সালে সর্বপ্রথম বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে সৌরজগতের বাইরের কোন প্রজাতির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে একটি প্রজেক্ট চালু করেন যার নাম ছিল প্রজেক্ট ওজমা। এখন এই ওজমার মত এরকম প্রজেক্ট প্রায় দশটির-ও বেশি দেশ পরিচালনা করছে আর অনুসন্ধান করে চলেছে কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন অজানা কিছু ধরা পড়েনি। বিশাল মহাবিশ্বে এই খোঁজের শুরু বা শেষ কোথায় সেটা নির্ণয় করা এখন সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। 

আমাদের পৃথিবী যেই গ্যালাক্সির বাসিন্দা তার নাম হলো মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি আর অন্য হাজার হাজার বা লক্ষ কোটি গ্যালাক্সির কথা নাইলে বাদ-ই দিলাম। শুধু আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে রয়েছে প্রায় কুড়ি হাজার থেকে ৪০ হাজার কোটি নক্ষত্র আর এই নক্ষত্রে পরিভ্রমণরত প্রাণের উপযোগী কোন গ্রহ খুঁজে ফেরা টা অনেকটা পাগলামিই মনে হতে পারে কিন্তু এরপরও বিজ্ঞানীরা এলিয়েন রহস্য উন্মোচনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বের অধিকাংশ বিজ্ঞানীর মতে এই মহাবিশ্বে আমরা একা নই আমাদের মতো আরো অনেক বুদ্ধিমান প্রাণী ছড়িয়ে আছে মহাবিশ্বে আর এদেরকে আমরা এলিয়েন নাম দিয়ে খোঁজার এবং বোঝার চেষ্টা করছি।

বিজ্ঞানি স্টিফেন হকিং এর মতে আমাদের মহাবিশ্ব আর এত গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথ এর মধ্যে কি কোথাও নেই এলিয়েন। তিনি বিশ্বাস করেন অবশ্যই এলিয়েন আছে শুধু আমরাই তাদেরকে খুঁজে পাচ্ছি না তবে একদিন তাদের খোঁজ নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে। 

এলিয়েন নিয়ে আপনার কোন মতামত থাকলে অবশ্যই আমাদেরকে জানাতে ভুলবেন না, ধন্যবাদ।

No comments:

Powered by Blogger.